AlMunadiyaPostAd

বিনা অনুমতি তে পাবলিক এর মোবাইল চেক করতে পারবে কিনা পুলিশ?

পুলিশ কি চাইলেই মোবাইল ফোন
তল্লাশি করতে পারে?

না, পুলিশ বিনা অনুমতিতে পাবলিকের মোবাইল চেক করতে পারবে না। বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় বলা হয়েছে, পুলিশ একজন ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি করতে পারবে, যদি পুলিশ মনে করে যে সেই ব্যক্তির কাছে কোনো অবৈধ বস্তু বা ব্যক্তি রয়েছে। তবে, এই তল্লাশির সময় পুলিশকে অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে তার অধিকার সম্পর্কে অবহিত করতে হবে এবং তল্লাশির কারণ উল্লেখ করতে হবে।


নাগরিকের মোবাইল ফোন চেক করার এখতিয়ার পুলিশকে কে দিলো?

মোবাইল ফোন একটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি। একজন ব্যক্তির মোবাইল ফোন তল্লাশি করার জন্য পুলিশকে অবশ্যই সেই ব্যক্তির সম্মতি নিতে হবে। যদি ব্যক্তিটি সম্মতি না দেয়, তাহলে পুলিশকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ সরকার একটি নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনে বলা হয়েছে, পুলিশ কোনো ব্যক্তির মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে চাইলে তাকে অবশ্যই আদালতের অনুমতি নিতে হবে। তবে, এই আইন এখনও কার্যকর হয়নি।
সুতরাং, বর্তমানে বাংলাদেশের আইন অনুসারে, পুলিশ বিনা অনুমতিতে পাবলিকের মোবাইল চেক করতে পারবে না। যদি পুলিশ কোনো ব্যক্তির মোবাইল চেক করে, তাহলে সেই ব্যক্তির উচিত তার অধিকার সম্পর্কে অবগত থাকা এবং পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
১৯৪৮ সালে ঘোষিত জাতিসংঘ মানবাধিকার ঘোষণার ১২ নম্বর আর্টিকেলে বলা হয়েছে,' কারো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কিংবা তার গৃহ, পরিবার ও চিঠিপত্রের ব্যাপারে খেয়াল- খুশিমতো হস্তক্ষেপ কিংবা তার সুনাম ও সম্মানের ওপর আঘাত করা চলবে না। এ ধরনের হস্তক্ষেপ বা আঘাতের বিরুদ্ধে আ‌ইনের আশ্রয় লাভের অধিকার প্রত্যেকের‌ই রয়েছে।'



বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদেও বলা হয়েছে,' রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ- সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনতা রক্ষার অধিকার থাকিবে।' এখানে যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের মধ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

অনেকেই মোবাইল ফোনের সাধারণ কলের বদলে হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার বা ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা বলেন। অথচ এখন রাস্তায় দাঁড় করিয়ে পুলিশ যদি নাগরিকদের হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্য কোনো টেক্সট, ছবি বা ভিডিও চেক করে — যেখানে একজন নাগরিকের খুব ব্যক্তিগত কোনো জিনিসও থাকতে পারে — রাষ্ট্রের সংবিধান, আইন বা নীতি কি সেটাকে সমর্থন করবে? মনে রাখা দরকার, প্রত্যেক মানুষেরই সম্মান রয়েছে। অধিকার রয়েছে। আদালতে কেউ দোষী বা অপরাধী প্রমাণিত হলে সেই অপরাধীরও মানবাধিকার রয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন